ভাবসম্প্রসারন: পথ পথিকের সৃষ্টি করে না, পথিকই পথের সৃষ্টি করে

ভাবসম্প্রসারন: পথ পথিকের সৃষ্টি করে না, পথিকই পথের সৃষ্টি করে।

মূলভাব: উক্তিটি রূপক তাৎপর্যে অনুপম। এর আক্ষরিক অর্থ এই যে, আসলে পথ পথিকের সৃষ্টি করতে পারে না, পথিকই পথের সৃষ্টি করে।

ভাব-সম্প্রসারণ: জীবনচক্রে আবর্তনকারী পথিক মহাজীবনের রথ, সে গতির প্রতীক। পথিকের পদচিহ্নে অঙ্কিত হয় পদরেখা। এ ক্ষেত্রে উক্তিটি অত্যন্ত তাৎপর্য পূর্ণ ও অর্থবহ। এ পৃথিবীতে মানুষের পদচিহ্নকে বুকে ধারণ করেই পথের উৎপত্তি হয়েছে। পথিক পথের সৃষ্ট বস্তু নয়। ঠিক একইভাবে মানুষ কখনাে অদৃষ্টের তৈরি বস্তু হতে পারে না। প্রবাদ আছে—Man is the architect of his own fortune. সে নিজের সাধনা ও ঐকান্তিক কর্ম প্রচেষ্টার দ্বারা নিজের ভাগ্য গড়ে তােলে। কপাল গুণে মানুষ বড় হয় না, বড় হয় কর্মের মাধ্যমে। অর্থাৎ, মানুষ নিজেই তার সৌভাগ্যের ধারক ও বাহক। এটি কেউ কাউকে দান করতে পারে না।

অতএব মানুষের মুক্তির জন্য যেসব মহাপুরুষ পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়েছেন, তাঁরাই সঠিক পথের পথিক। তাঁদের পথ নির্দেশনা প্রতিটি মানুষের আত্মমুক্তির ক্রমিক পরিণাম। তাদের প্রদর্শিত পথে চলে প্রত্যেক মানুষ স্বমহিমায় ভাস্বর হয়ে উঠতে পারে। তাই মহাজ্ঞানী, মহাজনদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা যদি তাদের প্রদর্শিত পথে চলতে পারি তাহলে আমরাও স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে থাকতে পারব।

মন্তব্য: মহৎপ্রাণ মানুষেরা আমাদের অগ্রপথিক। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণে আমাদের জীবন কল্যাণমুখী হয়।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url