দীর্ঘদিন শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ সতেজ থাকার উপায়

দীর্ঘদিন সুস্থ থাকার উপায় ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় আমাদের সকলের জানা উচিত। কারন এটি হতে পারে  আপনার সারা জীবন সুস্থ থাকার উপায়। ফিট থাকার উপায় হিসেবে জানতে হবে সুস্থ থাকার জন্য খাবারের তালিকা।সুস্থ থাকার জন্য খাদ্য তালিকা আপার শরিলের পুষ্টি ঘাটতি পুরন করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। গরমে সুস্থ থাকার উপায়  ও শীতে সুস্থ থাকার উপায় ভিন্ন তাই আমাদের এ সকল উপায় জানা ও মেনে চলা উচিত।ফিট থাকার উপায় জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
Sustho thakar upay
শারীরিক সুস্থতা আমাদের একান্তই কাম্য। তবে সুস্থ থাকতে হলে আমাদের শরীরের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। এবং প্রতিদিনের কাজ গুলো রুটিন মাফিক করতে হবে। শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতা ও একান্ত দরকার। কারণ শরীর এবং মন এই দুই নিয়েই আমাদের সমস্ত কিছু কাজ করে। যেমন আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে শারীরিকভাবে সুস্থ কখনোই থাকতে পারবেন না। অপরদিকে শারীরিক অসুস্থতা থাকলে মানসিক দিক থেকেও মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। আজ সারা জীবন সুস্থ থাকার জন্য মোট পাঁচটি উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব।এসকল উপায় গুলো আপনি নিয়মিত পালন করলে আপনার শরীর থাকবে সুস্থ সবল এবং রোগ মুক্ত।

সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করা- শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে হলে সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এবং এছাড়াও অনেক শারীরিক সমস্যা দূর হয়। সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার ফলে সারা দিনে প্রচুর পরিমানে সময় পাওয়া যায় বিভিন্ন কাজের জন্য । এছাড়াও সকাল বেলার আবহাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই আপনি যদি দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন তাহলে সকাল বেলায় সুন্দর আবহাওয়া উপভোগ করতে পারবেন না। জ্ঞানীরা বলে থাকে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠলে তিনটি জিনিস পাওয়া যায়। সেটি হচ্ছে শারীরিক সুস্থতা, সম্পদ এবং সময়। যা আমাদের জীবনে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। তাই সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করা উচিত শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য। সকলা বেলা ঘুম থেকে উঠে কখনোই বিছানায় শুয়ে থাকবেন না।সবাল বেলা ঘুম থেকে উঠে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে দিনের সকল কাজ শুরু করতে হবে।

সকালবেলা হাঁটার অভ্যাস করা- প্রতিদিন হাটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আমাদের বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে মানুষ অলস হয়ে পড়ছে। তাই অনেকেরই প্রতিদিন যে পরিমাণ পরিশ্রম করা উচিত তা করেনা। শারীরিক পরিশ্রম না করলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ বাসা বাঁধতে পারে। শারীরিক পরিশ্রম না করলে শরীরের সুষ্ঠু বিকাশ সম্পন্ন হয় না। যদি রোজ সকালে অন্তত পক্ষে আধা ঘন্টা হাঁটেন তাহলে আপনার শরীর এবং মন সুস্থ থাকবে। কারণ সকালের নির্মল আবহাওয়া আপনার মন ফুরফুরে এবং চাঙ্গা করে তুলবে। অপরদিকে হাঁটার ফলে আপনার প্রতিদিনের ব্যায়াম এর চাহিদাও পূরণ হবে। এছাড়াও নিয়মিত হাটার ফলে হাই ব্লাড প্রেশার এবং ডায়বেটিস এর মত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে না।

প্রয়োজন মতো পানি পান করা- বেঁচে থাকার জন্য পানি পান করা অপরিহার্য। এর জন্য পানির অপর নাম জীবন বলা হয়। একজন সুস্থ সবল মানুষকে দৈনিক  থেকে চার লিটার থেকে পাঁচ লিটার পানি পান করা উচিত। এছাড়া সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে পানি পান করার ফলে শরীর তার কার্যক্ষমতা ফিরে পায়। এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে। অন্তত পক্ষে ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে দুই গ্লাস পানি পান করা উচিত। এবং প্রতিদিন খাবার আগে পানি পান করা উচিত। আমাদের শরীর থেকে এবং রক্ত থেকে বিভিন্ন ধরনের দূষিত পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়। রক্ত বিশুদ্ধ করতে পানির কোন বিকল্প নেই। এছাড়াও গ্যাস্ট্রিক কোষ্ঠকাঠিন্য এর মত জটিল সমস্যা নিয়মিত পানি পান করার ফলে দূর হয়। তবে পানি একবারে কতগুলো পান করবেন না। কিছুক্ষণ পর পর পানি পান করুন।এতে একদিকে যে সরিল সুস্থ থাকবে।তেমনি একবারে বেশি পানি পান করার জন্য অস্বস্তিও তৈরি হবেনা।

পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা- শরীরের সুষ্ঠু বিকাশ ও পুষ্টির চাহিদা ছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ সার্বিক কাজের জন্য পুষ্টিকর খাদ্যের কোন বিকল্প নেই। তবে পুষ্টিকর খাদ্যের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাদ্য অত্যন্ত জরুরি। খাবার স্বাস্থ্যকর না হলে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। সুষম খাদ্যের মধ্যে প্রত্যেকটি পুষ্টিগুণ এবং শরীরের জন্য দরকারি পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে। আমাদের প্রতিদিন সুষম খাদ্য খাওয়া উচিত। এছাড়াও দৈনিক খাদ্যতালিকায় ফলমূল-শাকসবজি ডিম দুধ এবং অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার রাখা উচিত। শাকসবজি খাওয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।এবং তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত না। তাই অতিরিক্ত তেল চর্বি ও মসলা যুক্ত খাবার খাওয়া কমাতে হবে। এছাড়া এগুলোর পাশাপাশি প্রতিদিন ফল খাবেন।এক্ষেত্রে দেশিয় ফল খাওয়া যেতে পারে।দেশিয় ফল যেমন টাটকা ও বিভিন্ন ক্যামিকেল মুক্ত থাকে। তেমনি পুস্টি গুন সমৃদ্ধ থাকে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান - শরীর সুস্থ রাখার অন্যতম উপাদান হচ্ছে ঘুম। নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে শরীরের বিভিন্ন অসুবিধা হতে পারে। এর থেকে শারীরিক অসুস্থতা এবং মানসিক অসুস্থতা হতে পারে। একজন সুস্থ সবল ব্যক্তির দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। তাহলে শরীরের ঘুমের চাহিদা দূর হয়। প্রাণবন্ত একটি দিন উদযাপন করার জন্য ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। তবে ঘুমানোর ক্ষেত্রে কয়েকটি নিয়ম কানুন অনুসরণ করতে হবে। যেমন রাত জেগে সকালে বেশী বেলা করে ঘুমানোর অভ্যাস করা যাবে না। প্রতিদিন রাত দশটার পরে ঘুমাতে যাওয়া উচিত। এবং সকালবেলা ছয়টা বাজার পরপরই ঘুম থেকে উঠে পড়তে হবে। ঘুম ভাঙার পর কখনোই বিছানায় শুয়ে থাকতে হয় না। ঘুম ভাঙ্গার পরে বিছানায় শুয়ে থাকলে শরীর অলস হয়ে যায় এবং প্রতিদিনের কাজের গতি কমে যায় তাই ঘুম ভাঙার পর এই বিছানা ত্যাগ করা উচিত।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা: সুস্থ থাকার জন্য পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা জরুরি। যেমন নিয়মিত হাত ধোয়া।পরিস্কার পানিতে গোসল।মল মূত্র ত্যাগের পরে সাবান বা হ্যান্ড ওয়াশের মাধ্যমে হাত ধুয়ে ফেলুন। যেকোনো ফলমূল খাবার আগে তা ভালভাবে ধুয়ে খান।

নিয়মিত ব্যায়াম করা: শরীর সুস্থ সবল রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করার কেন বিকল্প নেই। প্রতিটি মানুষের দৈনিক ০.৫-১ ঘন্টা ব্যায়াম করা উচিত। কারন এটি আমাদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দূর করে।এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এবং পেশি শক্তিশালী করতে সহয়তা করে।

উপরোক্ত টিপস গুলো ভালো করে মেনে চললে আপনি থাকবেন সুস্থ ও সবল।যে কোন রোগ ও অসুখ বিসুখ হতে আপনাকে রাখবে সুস্থ সবল।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url