কানের সংক্রমন কেন হয় এবং মুক্ত থাকার উপায়

আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ সংবেদনশীল অংশ হলো কান।আমরা কানের থাকি। এসকল সমস্যার মধ্যে  একটি অন্যতম সমস্যা হলো কানে ব্যথা।আমরা বিভিন্ন কারনে কানে ব্যাথা হয়ে থাকে তবে
  আর তাই ব্যথার কারণ জেনে নিলে তবেই আমরা কানে ব্যাথার জন্য পদক্ষেপ গ্রহন  করতে পারব।আমাদের বিভিন্ন কারনে কানে ব্যাথা হয় এবং অনেকেই এই সমস্যায় অনেক যন্ত্রনা ভোগ করতে হয়!আসুন তাহলে কানে ব্যাথার কারন,চিকিৎসা এবং সতর্কতা সম্পর্কে জানবো।

কানে ব্যথার প্রধান কারণ-

কানে ব্যাথার অনেক কারন থাকতে পারে তবে কানে ব্যথা, কান ভারি লাগা বা কানের সমস্যার পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে সংক্রমণ।আমরা অনেকেই মনে করি শুধু শীতকালে ঠাণ্ডা লেগেই কিন্তু কানে ইনফেকশন হয় না। সারা বছরেই কানে ইনফেকশন হতে পারে।কিন্তু কানে কেন এই সংক্রমণ হয় এবং কীভাবে সংক্রামন রোধ করতে পারি তা আগে থেকে যেনে রাখা ভাল

কানে যন্ত্রনা কেন হয়?

সাধারণ ভাবে কানের বাইরের দিকে বা মিড্ল ইয়ারেই সংক্রমণ হয় ও ঠাণ্ডা লাগলে নাকের সর্দিটা কানের দিকে চলে গিয়ে সংক্রমণ হয়। বড় বা ছোট সবার কানের সংক্রমণ হতে পারে।কান পরিষ্কার করতে ইয়ার বাড ব্যবহার করে এতে খুব সহজেই কানে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে এবং ইনফেকশন হতে পারে। এক্সটার্নাল ইয়ারে তখন ফাঙ্গাল ইনফেকশন হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। এ ছাড়া অনেকেরই স্বভাব থাকে কটন বাড দিয়ে সারাক্ষণ কান পরিষ্কার করার। সেটাও বিপজ্জনক।শরীর সুস্থ রাখতে অনেকেই সাঁতার কেটে থাকে।সাতার কাটার সময় কানে পানি গিয়েও যন্ত্রনা তৈরি করতে পারে।আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রত্যেকের কানেই একটা ওয়্যাক্সের স্তর থাকে, যা কানের অন্দরমহলকে বাইরের ধুলোবালি থেকে রক্ষা করে। কিন্তু ঘনঘন কটন বাড দিয়ে কান খোঁচালে সেই স্তর নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া খুব ঠাণ্ডা লেগে আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাকে সংক্রমণ হলে তা পৌঁছে যেতে পারে কানে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।


কানে ব্যথা হলে কী করবেন?

শিশুদের কানে সংক্রমণ খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। বাচ্চারা কানে কিছু দিয়ে খোঁচাখুচি না করে সে দিকে খেয়াল রাখা আমাদের অত্যন্ত জরুরি। বাচ্চাদের কানে ব্যথা হলে তাদের কানে বেশি হাত না দেওয়াই ভালো।আমরা টর্চ দিয়ে ভেতরে কী সমস্যা হয়েছে তা কান টেনে দেখার চেষ্টা করি এতে শিশুর কানে আরো ব্যথা বাড়তে পারে। বরংচ অল্প অল্প করে হালকা গরম স্যাঁক দেওয়া উচিত।গ্রামের অনেকে কানে যন্ত্রনার কারনে কানে গরম তেল দিয়ে থাকেন কিন্তু  গরম তেল জাতীয় কোনো কিছু কানের ভেতরে দেওয়া উচিত না। শিশুর বারবার কানের সংক্রমণ হতে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

যে সকল বিষয়ে খেয়াল রাখবেন-

অনেক সময়ে গরম পানির সেক নিলেও কানের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আমরা কানের যন্ত্রনার জন্য কানের ড্রপ ব্যবহার করি প্রত্যেকটি কানের ড্রপ ব্যবহারের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে। কখনোই পুরোনো কানের ড্রপ ব্যবহার করবেন না।কানে আঙুল দিয়ে কখনোই  খোঁচাবেন না।কানে খোচালে কানের সংক্রমন হতে পারে এছাড়া নখ বড় থাকলে তা থেকে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।কানে ব্যথা হলে পরিষ্কার কাপড় হালকা গরম স্যাঁক দেওয়া যেতে পারে।সাতার কাটতে গিয়ে কানে পানি ঢুকে গেলে আমাদের মাঝে অনেকেই আবার কানে পানি ঢুকিয়ে সেই কান পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন।এটি একেবারেই উচিত নয়।নরম তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে যতটা সম্ভব পানি মুছে নেওয়া যায় মুছে নিন। বাকিটা ঠিক সময় মতো বেরিয়ে যাবে।

কান পরিষ্কার রাখতে কী করতে হবে?

কান পরিষ্কার রাখার জন্য বাইরে থেকে আমাদের কিছু করার প্রয়োজন নেই। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে কানকে নিজের মতো থাকতে দিন। কান নিজেই নিজেকে পরিষ্কার রাখতে সক্ষম। কান পরিষ্কার করতে বারবার কটন বাড ব্যবহার করা, পানি দেওয়ার স্বভাব থাকলেই বরং কানে ইনফেকশনের আশঙ্কা বেড়ে যেতে পারে। তার চেয়ে বরং প্রতিদিন গোসলের পরে নরম তোয়ালে দিয়ে কানের যতটা অংশ পারবেন মুছে নিন।কখনোই জোর করে কানের ভেতরে খোঁচাখোঁচি করবেন না।

কানের সংক্রমন থেকে সতর্ক থাকুন-

 ছোট শিশুকে কোলে শুইয়ে দুধ খাওয়ানোর সময়ে খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চার কানে যেন দুধ চলে না যায়। অনেক সময়ই বাচ্চাদের কানে দুধ ঢুকে সংক্রমণ হয়ে থাকে।সেফটিপিন বা কোনো কাঠি দিয়ে কখনোই কান পরিষ্কার করবেন না এবং খোচাবেন না।
অনেকেই মোবাইলের ইয়ারফোন ব্যবহার করে থাকে এবং একে অপরের সাথে ইয়ারফোন শেয়ার করি কিন্তু কারো সঙ্গে ইয়ারফোন শেয়ার না করা উচিত নয়। ইয়ারফোন ব্যাগের মধ্যে ফেলে রেখে দিলে তাতে ধুলোবালি ও ব্যাকটেরিয়া বাসা জমতে পারে। তখন সেটি কানে গোঁজার সময়ে তা সহজেই কানের ভেতরে প্রবেশ করে থাকে। এতে সংক্রমণ খুব সহজেই ছড়ায় এবং দ্রুত।
কোন কারনে কান ভারি লাগলে বা কানে শুনতে অসুবিধা হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।এবং কান ধরে বেশি টানাটানি করবেন না।তাহলে কান সুস্থ থাকবে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url