ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় এমন ২টি উপায়

আমরা অনেকেই চিন্তা করি ফেসবুক থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় (Earn Money From Facebook) । তবে প্রপার গাইডলাইনের অভাবে আমরা অনেকেই ব্যর্থ হয়ে থাকে। আমরা আজকে আলোচনা করব কিভাবে ফেসবুক পেজ থেকে টাকা আয় করা যায় এবং কি কি উপায়ে। ফেসবুক থেকে বিভিন্ন উপায়ে টাকা আয় করা গেলেও আমরা মূলত আজকে প্রধান দুইটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। যে দুইটি উপায় ফেসবুক কর্তৃক বৈধ উপায়। এই উপায়ে দুইটির একটি হচ্ছে ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে আয় এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর মাধ্যমে ফেসবুক হতে আয়।

ইতিমধ্যে আমরা ফেসবুক থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে জেনেছি। যেমন ফেসবুকে মার্কেটিং করে আয়। ফেসবুক একাউন্ট খুলে আয় ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে এ সকল উপায়ে ফেসবুক হতে আয় করা গেলেও এগুলো কিন্তু ফেসবুক কর্তৃক স্বীকৃত কোন উপায় না।

ফেসবুক ভিডিও থেকে আয় (Earn Money From Facebook Video): ফেসবুক ভিডিও থেকে আয় এই কথাটি আমরা অনেক আগে থেকেই শুনেছি। কিন্তু এর সঠিক গাইডলাইন আমাদের কাছে নেই এর ফলে অনেকেই আমরা ফেসবুক ভিডিও হতে আয় করতে ব্যর্থ হই। আমরা জানি ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে টাকা আয় করা সম্ভব এবং অনেকেই বর্তমানে ইউটিউব এ চ্যানেল তৈরি করে ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে আয় করে থাকে। বর্তমানে ফেসবুকও ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে আয় করার সুযোগ দিয়েছে এর জন্য আপনার একটি ফেসবুক পেইজ থাকতে হবে এবং সেই পেইজে যথেষ্ট পরিমাণ ভিডিও আপলোড করা দরকার ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন এর জন্য। সাধারণত ফেসবুক পেইজে 10,000 লাইক থাকলে আপনি পেজটি মনিটাইজেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং ভিডিওতে ও যথেষ্ট পরিমাণ রিভিউ থাকা জরুরি।

তবে আমরা ইউটিউবে কপিরাইট সম্পর্কে জানি। ইউটিউবের কপিরাইট আইন থাকার কারণে আপনি চাইলেই অন্য কারো ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করতে পারবেন না যদি আপনি অন্য কারো ভিডিও আপলোড করে থাকেন তাহলে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ আপনার আপলোড করা ভিডিওটি ডিলিট করে দিবেন এবং আপনাকে ওপেন ভিডিও আপলোড করার জন্য স্ট্রাইক দিবে এছাড়াও কপিরাইট ভিডিওতে আপনি কখনোই ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন করতে পারবেন না।

এক্ষেত্রে ফেসবুক কিছুটা ব্যতিক্রম আপনি চাইলে যেকোন ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করতে পারবেন এক্ষেত্রে আপনাকে তারা কোন কপিরাইট স্ট্রাইক কিছুই দিবে না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আপনি যখন আয় করার জন্য আপনার পেজে ভিডিও আপলোড করবেন তখন কোনভাবেই কপিরাইট ভিডিও আপলোড করতে পারবেন না। হায়রে জন্য ভিডিও আপলোড করলে অবশ্যই আপনাকে ইউনিক কন্টেন্ট আপলোড করতে হবে।

নির্ধারিত পেইজ লাইক এবং ভিডিওতে ভিউ অর্জন করার পরে আপনি আপনার ফেসবুক পেজটি মনিটাইজেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এবং আপনার মনিটাইজেশন আবেদন গৃহীত হলে আপনার ফেসবুক পেজের ভিডিওতে ফেসবুক কোম্পানি বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করবে। এক্ষেত্রে আপনার জেনে রাখা ভালো ইউটিউব যেমন আপনাকে শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের উপর নির্ভর করে অর্থ দেয় ফেসবুক থেকে ও একই নিয়মেই টাকা দিবে। যে পরিমাণ বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা হবে ঠিক তার ওপর নির্ভর করেই আপনি টাকা পাবেন কখনোই আপনার ভিউ এর উপর নির্ভর করে অর্থ পাবেন না।

ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল (Facebook Instant Article): ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল কথাটির সাথে আমরা নতুন পরিচিত। আমরা অনেকেই হয়তো জানি না যে ফেসবুকে ভিডিও আপলোড ছাড়াও ইনকাম করা সম্ভব। আমরা যেমন ব্লগ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গুগল এডসেন্স হতে টাকা আয় করতে পারি ঠিক তেমনি ফেসবুকে আর্টিকেলস এডমিট এর মাধ্যমেও আমরা আয় করতে পারি। এক্ষেত্রে সবচাইতে সুবিধার এবং খুশির সংবাদ হচ্ছে এই যে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর মাধ্যমে ফেসবুক হতে আয় করতে চাইলে আপনি আপনার গুগোল অ্যাডসেন্সের জন্য তৈরি করা ব্লগ বা ওয়েবসাইট হতে আয় করতে পারবেন এক্ষেত্রে একদিকে যেমন আপনার গুগল এডসেন্স হতে হবে তেমনি এ কিভাবে ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর মাধ্যমেও আপনি আর সুযোগ পাচ্ছেন।

কিভাবে আয় করবেন ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর মাধ্যমে! এটি একটি জটিল প্রশ্ন কারণ ফেসবুকে আপনার আর্টিকেল শেয়ার করলেই আপনি আয় করতে পারছেন এরকম কিন্তু নয় এর জন্য রয়েছে কিছু নিয়ম-কানুন এবং বিধি নিষেধ। তাহলে চলুন জেনে নেই ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর মাধ্যমে ফেসবুক হতে আয় করতে হলে কোন কোন বিষয়ে আমাদের নজর রাখতে হবে এবং কিভাবে কাজ করতে হবে। 

ফেসবুকে ভিডিও আপলোড এর মাধ্যমে আয় করতে হলে আপনাকে যে রকম একটি পেইজ থাকতে হবে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর মাধ্যমে আয় করতে চাইলেও আপনার একটি ফেসবুক পেজ থাকা অত্যন্ত জরুরী। এবং ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর জন্য আপনার সেই পেইজ হতে ব্লগের জন্য বা ওয়েবসাইটের জন্য ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এ আবেদন করতে হবে। তবে এর জন্য অবশ্যই আপনার ফেসবুক পেজে 1000 লাইক থাকতে হবে এবং পেইজে রিচ থাকতে হবে মোটামুটি ভালো।

আপনার ফেসবুক পেইজে যদি 1000 লাইক থাকে এবং আপনার ব্লগে যথেষ্ট পরিমান আর্টিকেল থাকে তাহলে আপনি ফেসবুকে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর জন্য আবেদন করতে পারেন। ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল আবেদন করতে হলে আপনাকে প্রথমে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল ভেরিফাই করে নিতে হবে এবং আপনার ফিড ইউআরএলটি সাবমিট করতে হবে।  এসকল কাজ করা হয়ে গেলে আপনার আবেদনটি তারা খতিয়ে দেখবে এবং সব ঠিকঠাক থাকলে তারা আপনার ব্লগটি ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর জন্য আপলোড করে দিবে। স্টার্ট আর্টিকেলে আপনার ব্লগ টি অ্যাপ লক হয়ে গেলে পরে আপনি দেখতে পাবেন আপনার ব্লগের কোন কোন পোস্টগুলি ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর জন্য অ্যাপ্রুভ হয়েছে।

এরপরে আপনার ইন্সট্যান্ট আর্টিকেলে অ্যাপ্রুভ হওয়া পোস্টগুলি ফেসবুকে নিয়ম অনুসারে শেয়ার করুন এবং ফেসবুক হতে যখনই আপনার আর্টিকেলটি ভিউ হবে আপনি আপনারা আয়ের টাকা আপনার একাউন্টে জমা হতে থাকবে এবং সর্বনিম্ন 100 ডলার হলেই আপনার ব্যাংকে তারা প্রতি মাসের নির্দিষ্ট সময়ে টাকা পাঠিয়ে দেবে।

ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য (important information for instant article): আমরা জানতে পারলাম ফেসবুকে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল সম্পর্কে যেখানে আপনি ফেসবুক হতে আপনার ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন তবে সমস্যা হচ্ছে আমরা এখনও এই ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল সম্পর্কে বেশি কিছু জানিনা এটি আসলে কি বা কিভাবে কাজ করে সম্পর্ক রয়েছে আমাদের বিভিন্ন প্রশ্ন। ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল হচ্ছে মূলত গুগোল এ এম এর মত একটি ফিচার। গুগোল AMP কি?

গুগোল এএমপি (Google AMP) হচ্ছে এমন একটি ফিচার যেখানে মোবাইল ডিভাইস ব্যবহারকারীরা খুব দ্রুত একটি ওয়েবসাইটের আর্টিকেল লোড করার সুবিধা পেয়ে থাকে। আমরা সকলেই জানি একটি ব্লগের সম্পূর্ণ পেউজ লোড হতে বেশ খানিকটা সময় লেগে যায়। এবং মোবাইল ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে এই সময় একটু বেশি লাগে। এক্ষেত্রে গুগল এমপি ব্লগের পোস্ট টি একটি আলাদা পেজের মধ্যে লোড করে খুব দ্রুত পাঠকের নিকট উপস্থাপন করে।

ঠিক তেমনি ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল একই রকম ভাবে কাজ করে এবং এই ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর মধ্যে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে তারা যে আয় করে তার একাংশ কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে তারা একদিকে যেমন বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য আলাদা সুযোগ পাচ্ছে এছাড়াও তারা চায়না ফেসবুকের একজন গ্রাহক তাদের প্লাটফর্ম থেকে বের হয়ে যাক। তাই তারা ফেসবুকের ভিতরে ব্লগের আর্টিকেলটি লোড করে পাঠকের নিকট উপস্থাপন করে। এছাড়াও এটি অনেক দ্রুত গতির প্রযুক্তি হয় পাঠক ও এর প্রতি আগ্রহী হয়ে থাকেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url