ক্রিপ্টো ট্রেডিং (Crypto Trading) কি এবং কিভাবে ট্রেডিং করবো

"ট্রেডিং" শব্দটির আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বানিজ্য, লেনদেন বা কেনাবেচা। তাহলে ক্রিপ্টো ট্রেডিং (Crypto Trading) কি? এ সম্পর্কে জানতে হলে আগে জানতে হবে ক্রিপ্টো বা ক্রিপ্টোকারেন্সি (Crypto / Cryptocurrency) কি? আমরা অনেকেই বিটকয়েনের নাম শুনেছি। এটি হচ্ছে একটি ভার্চুয়াল (Virtual) মুদ্রা। যার অপর নাম হচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সি। তবে শুধুমাত্র বিটকয়েনই একমাত্র ভার্চুয়াল মুদ্রা নয়। আরো হাজারো ক্রিপ্টোকারেন্সি রয়েছে এই জগতে।

তাহলে এই ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনাবেচাই হচ্ছে ক্রিপ্টো ট্রেডিং। আমরা এছাড়াও ফরেক্স ট্রেডিং (Forex Trading) এর নাম শুনেছি। এটিও প্রায় ফরেক্স ট্রেডিংয়ের মতই। এই ক্রিপ্টো কারেন্সি কেনা বেচার মাধ্যমে আয় করার নামই হচ্ছে ক্রিপ্টো ট্রেডিং।

ক্রিপ্টোকারেন্সির অনেক গুলো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন এটি ভার্চুয়াল মুদ্রা তাই এটি হচ্ছে অনলাইন লেনদেনের একটি অন্যতম উপায়। এছাড়া এটির অপর নাম ক্রিপ্টোকারেন্সি (Crypto-currency) দেওয়ার কারন হলো এটির লেনদেন সম্পুর্ন গোপনীয়তা সাথে হয়ে থাকে। তাই এর উপকারিতার সাথে সাথে কিছু সমস্যাও রয়েছে। যেমন বিভিন্ন অবৈধ লেনদেন এর ব্যাবহার ব্যাপক ভাবে হয়ে থাকে।

তবে এই ক্রিপ্টো কারেন্সির সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট হলো এটির দাম বা মূল্য খুবই দ্রুত ওঠানামা করে। প্রতি মিলি সেকেন্ডে এর দাম পরিবর্তন হয়ে থাকে। এ কারনেই ক্রিপ্টো ট্রেডিং এতোটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

ট্রেডিং করার জন্য রয়েছে বিভিন্ন প্লাটফর্ম। যেখানে খুব সহজেই আপনি ট্রেডিং করতে পারবেন। বিশ্বে অনেক জনপ্রিয় ট্রেডিং প্লাটফর্ম (Platform) রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য এবং জনপ্রিয় ক্রিপ্টো ট্রেডিং প্লাটফর্ম হলো,  -Binance (Binance.com), কয়েনবেস প্রো-Coinbase Pro (pro.coinbase.com), হবেই গ্লোবাল-Huobi Global (Huobi.com), ক্রাকেন-Kraken (kraken.com) , বিটফিনেক্স-Bitfinex (Bitfinex.com), বিটহাম্ব-Bithumb (Bithumb.com), বিটস্টাম্প-Bitstamp (Bitstamp.net) এগুলো হচ্ছে বিশ্বে শীর্ষ ক্রিপ্টো ট্রেডিং প্লাটফর্ম।

এবার আসা যাক মূল বিষয়ে, ক্রিপ্টোকারেন্সি-র মূল্য যেহেতু দ্রুত ওঠানামা করে তাই এর থেকে লাভবান হওয়া যায় খুবই দ্রুত। ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে মূলত লক্ষনীয় বিষয় হচ্ছে আপনি কম দামে কিনবেন এবং বেশি দামে বিক্রি করবেন। তবেই আপনার লাভ হবে। ঠিক সাধারন ব্যাবসার মত হিসেব করলে সহজেই বিষয়টি বুঝতে পারবেন।

একজন দোকানি তার দোকানে বিক্রি করার জন্য পন্য কম দামে কিনে অর্থাৎ পাইকারি দামে ক্রয় করে খুচরা দামে (বেশি মূল্যে) বিক্রি করে। এখানে ক্রয় আর বিক্রয়ের মূল্যের ব্যাবধানই হচ্ছে তার লাভ বা ক্ষতি।

তবে ক্রিপ্টো ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে বিষয়টি এমন হলেও এতোটা সহজ নয়। দোকানের ক্ষেত্রে যেমন একটি পন্যের পাইকারি মূল্য ৮০ টাকা হলে বিক্রিয় মূল্য ৯০-১০০ টাকা হবে এবং আপনার লাভ হবে ১০-২০ টাকা এমন নয়। এখানে আপনি কোন কিছুই পাইকারি সেল হয় না। আপনাকে সাধারণ মূল্যেই ক্রিপ্টো কিনতে হবে এবং এবং মূল্য বৃদ্ধি পেলে বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন এবং এবং মূল্য হ্রাস পেলে লস করবেন।

তাহলে প্রশ্ন একটা থেকেই যায় যেহেতু আমি খুচরা মূল্যেই যখন কিনেছি। এবং দাম বাড়বে কি না এটা অনিশ্চিত তাহলে লাভবান হবো কি করে লসও তো হতে পারে (বিঃদ্রঃ এখানে লাভ/লোকসান এবং ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার পরিমান অনেক বেশি) এখানে আপনি প্রতিবারই লাভবান হবেন এমন নিশ্চয়তা নেই। লোকসান ও গুনতে হতে পারে আপনাকে।

ক্রিপ্টো ট্রেডিং (Crypto Trading) এ লাভবান হওয়ার কি তাহলে কোন উপায় নেই। বা কোন ভাবে লাভবান হওয়া যায়? অথবা, লোকসান কমানের উপায় কি? ক্রিপ্টো ট্রেডিংয়ে লাভবান হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে ট্রেডিং সিগন্যাল নিয়ে কাজ করা। বর্তমানে অনেক গ্রুপ রযেছে যারা ক্রিপ্টো পাম্প সিগন্যাল (Pump Signal) দিয়ে থাকে। এ সিগন্যাল ফ্রি অথবা পেইড হতে পারে। তারা মার্কেট এনালাইসিস (Analysis) করে জানিয়ে দেয় কোন কয়েনের মূল্য আগামিতে বৃদ্ধি পাবে।

তাদের দেওয়া সিগন্যাল অনুযায়ী আপনি কয়েন ক্রয় করবেন। এবং মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার পরে সেল করে দিবেন। তবে এখানেও যে আপনি ১০০% লাভের নিশ্চয়তা পাচ্ছেন তা কিন্তু নয়। এখানেও ক্ষতি বা অনিশ্চয়তা রয়েছে। এবং কোন ভাবেই এই ঝুঁকি নিরাময় করা সম্ভব না। সকল ক্ষেত্রেই ক্রিপ্টো ট্রেডিং বা ফরেক্স ট্রেডিং বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url