ডোমেইন হোস্টিং কেনার আগে বা রেজিষ্ট্রেশন করার পূর্বে জেনে নিন

একটি ওয়েবসাইট তৈরির অন্যতম উপাদান হচ্ছে ডোমেইন এবং হোস্টিং। তবে এই ডোমেইন কি হোস্টিং কি (What is Domain Hosting) ? সহজভাবে বলতে গেলে ডোমেইন হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানা এবং হোস্টিং হচ্ছে ওয়েবসাইট-কে  রাখার জায়গা। অর্থাৎ আমরা জানি কোন ফাইল রাখার জন্য স্টোর এর প্রয়োজন হয়। আর হোস্টিং হচ্ছে ওয়েবসাইটে রাখার জন্য বা ওয়েবসাইটের ফাইল রাখার জন্য স্টোরেজ। তবে একটি ওয়েবসাইট তৈরীর জন্য অবশ্যই আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয় করতে হবে। তবে ডোমেইন হোস্টিং কেনার আগে আমাদের কতগুলো বিষয় মাথায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডোমেইন হোস্টিং কেনার আগে আমাদের যে সকল বিষয় মাথায় রাখতে হবে: প্রথমত ডোমেইন হোস্টিং কেনার জন্য আমাদের মাথায় রাখতে হবে প্রোভাইডার বিশ্বস্ত কি না। এবং তাদের সার্ভিস সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেরা ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার দের কাছ থেকে ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয় করলে আপনি ভাল সার্ভিস পাবেন এটাই স্বাভাবিক।

ডোমেইন হোস্টিং এর দাম নিয়ে সতর্কতা: ডোমেইন-হোস্টিং ক্রয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষণীয় যে আপনি ক্রয়ের পূর্বে এর দাম সম্পর্কে সতর্ক হবেন। কারণ অধিকাংশ ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার অফার এর মাধ্যমে ডোমেইন-হোষ্টিং বিক্রি করে থাকে। তাই আপনি প্রথম বছরে অফারে কম দামে ডোমেইন হোস্টিং কিনতে পারলেও পরবর্তী বছরগুলোতে আপনাকে সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করতে হবে। কারণ ডোমেইন-হোষ্টিং ক্রয় বা কেনার কথা বললেও মূলত এটি ভাড়া নেওয়ার মতো প্রতিবছর আপনাকে রিনিউ করতে হবে।

তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রথম বছর অফারে খুব কম মূল্যে আপনি ডোমেইন-হোষ্টিং করার করতে পারলেও অনেক প্রোভাইডার পরবর্তী বছরে একই ডোমেইন হোস্টিং প্যাকেজের মূল্য অন্যান্য প্রোভাইডারদের থেকে বেছে নিচ্ছেন। এবং এটি যেহেতু প্রতিবছরই রিনিউ করতে হবে তাই আপনাকে রিনিউ করার মূল্য সম্পর্কে জেনে বুঝে ডোমেইন এবং হোস্টিং কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। এবং দেখে নিতে হবে তাদের প্যাক এর সাথে কোন হিডেন চার্জ বা শর্ত জুড়ে দেওয়া রয়েছে কিনা।

ডোমেইন হোস্টিং সরাসরি প্রোভাইডারদের থেকে কিনছেন নাকি রিসেলারদের থেকে: ডোমেইন হোষ্টিং কেনার ক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষ এটি বোঝে না তারা সরাসরি প্রোভাইডার থেকে  ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনছেন নাকি রিসেলারদের থেকে। আমাদের দেশের অধিকাংশ প্রোভাইডার হচ্ছেন রিসেলার। অর্থাৎ তারা অন্য কোনো প্রোভাইডার এর কাছ থেকে ডোমেইন হোস্টিং কিনে কমিশনের ভিত্তিতে আপনার কাছে বিক্রি করেছে। এক্ষেত্রে আমাদের দেশের বহু সংখ্যক রিসলার গন ভালো সার্ভিস দিলেও হয়রানির শিকার ও কিন্তু কম লোক হচ্ছেন না।

ডোমেইন হোস্টিং কিনতে খরচ: আমি প্রথমেই বলে রাখি প্যাকেজ এর উপর ভিত্তি করে ডোমেইন এবং হোস্টিং এর খরচ ও ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে সাধারণত এই দামের তারতম্য হয়ে থাকে হোস্টিং এর কারণে। ডোমেইন এর দাম সকল ক্ষেত্রে প্রায় এক। তবে খুব সামান্য হেরফের হতে পারে ২০-৫০ টাকার মত। একটি .Com ডোমেইন এর ক্ষেত্রে প্রথম বছরে আপনি 400 থেকে 600 টাকার মধ্যে কিনতে পারবেন। এবং রিনিউ 800 থেকে 900 টাকা প্রতি বছরের জন্য।

বিশ্বের সেরা ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার: বর্তমানে বিশ্বে বহু কোম্পানি রয়েছে যারা ডোমেইন-হোষ্টিং প্রভাইড করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, namecheap.com, godaddy.com, porkbun.com, epik.com ইত্যাদি ইত্যাদি।

দেশের সেরা ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার: বর্তমানে আমাদের দেশেও বহু সংখ্যক ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার রয়েছে তারা সরাসরি মিটিং করলো অর্থাৎ তারা হচ্ছে রিসেলার। কিন্তু আমি তারপরে বলবো তাদের সার্ভিস খুবই ভালো। এবং তাদের সাথে লেনদেন এর সহজলভ্যতা এবং কাস্টমার সাপোর্ট এর সুবিধার্থে আপনি অবশ্যই তাদের সেবা গ্রহণ করতে পারেন। আমাদের দেশের সেরা কিছু ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার হচ্ছে, https://www.exonhost.com, https://www.putulhost.com, https://itnuthosting.com, https://webhostbd.com ইত্যাদি ইত্যাদি।

ইন্টারন্যাশনাল ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার থেকে ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয়ের ক্ষেত্রে যে সকল সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তার মধ্যে সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে পেমেন্ট মেথড। এই আধুনিক যুগে এসেও আমাদের বাংলাদেশ ইন্টার্নেশনাল পেমেন্ট মেথড খুব কম রয়েছে। এবং অধিকাংশ ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট মেথদ বাংলাদেশ সাপোর্ট করে না এবং বাংলাদেশের থেকে লেনদেনের ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। যেমন ধরুন পেপাল। পেপাল হচ্ছে ইন্টার্নেশনাল পেমেন্ট গেটওয়ে। কিন্তু বাংলাদেশ পেপাল সাপোর্ট করেনা। অর্থাৎ আপনি চাইলেও বাংলাদেশের বসে পেপার ব্যবহার করতে পারবেন না এবং ব্যবহার করতে পারলেও বিভিন্ন কারণে আপনার পেপাল একাউন্টে যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে যার ফলে আপনি বড় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।

রিসেলার থেকে ডোমেইন কেনার সমস্যাগুলো: রিসেলারদের থেকে ডোমেইন কেনার প্রধান সমস্যা হচ্ছে তারা সরাসরি ডোমেইন প্রোভাইড করে না। আপনার থেকে টাকা নিয়ে অন্য সাইট থেকে আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করে দেয় তারা। এর ফলে আপনি সরাসরি ডোমেইন কনট্রোল প্যানেল পাচ্ছেন না। অপরদিকে আপনার ডোমেইন যদি ভ্যালুয়েবল হয় তখন আপনি সমস্যার শিকার হতে পারেন। কারণ যেহেতু আপনার হাতের ডোমেইন এর কন্ট্রোল প্যানেলে নেই।

এ কারণে আমি আপনাদের পরামর্শ দিব অবশ্যই সকল সময় চেষ্টা করবেন সরাসরি প্রোভাইডারদের থেকে ডোমেইন কিনতে কখনোই রিসেলার দের থেকে ডোমেইন কিনে না পারলে কিনবেন না। তবে আপনার যদি পেমেন্ট মেথড না থাকে তাহলে আপনার প্রথম পছন্দের তালিকায় রাখুন দেশের সেরা ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার দের। অন্যথায় তৃতীয় কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে পেমেন্ট করে ডোমেইন-হোস্টিং না কেনাই ভাল কারণ পরবর্তী বছর রিনিউ সময় আপনি সমস্যায় পড়তে পারেন তাছাড়া আপনি কোন লোকাল কাউকে দিয়ে পেমেন্ট করার চেষ্টা করলে আপনি অর্থ এবং ডোমেইন দুটিও খোয়াতে পারেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url