কিভাবে বিটকয়েন তৈরি হয় বা মাইনিং কি ও উপার্জন করার উপায়

আমাকের অনেকর মনেই প্রশ্ন ওঠে কিভাবে বিটকয়েন কাজ করে এবং নতুন বিটকয়েন তৈরি করা হয় ও বিটকয়েন আয় বা উপার্জন এর উপায় কি। এটি একটি সুন্দর প্রশ্ন। কারন যারা বিটকয়েন সম্পর্কে সামান্য হলেও জানেন তাদের মনে এমন প্রশ্ন আসা অস্বাভাবিক কিছুই নয়। বিটকয়েন কি (What Is Bitcoin)? বিটকয়েন একটি ভার্চুয়াল মুদ্রা (Bitcoin Is A Virtual currency)  বিটকয়েন কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান কতৃক নিয়ন্ত্রিত নয়। এবং এটি কোন সরকারী মুদ্রাও নয়। যে সরকার তার নিয়ম-নীতি অনুসারে টাকা ছাপায়ি বাজারে ছাড়লো। তাহলে কিভাবে তৈরি হয় এই বিটকয়েন? না এমন কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন বিটকয়েন তৈরি করা হয় না। বিটকয়েন তৈরি হয়ে থাকে মাইনিংয়ের মাধ্যমে। আমরা আজ আলোচনা করবো বিটকয়েন কি? কিভাবে নতুন বিটকয়েন তৈরি হয়  বা বিটকয়েন আয় বা উপার্জন এবং বিটকয়েন মাইনিং সম্পর্কে।
বিটকয়েন মাইনিং কি

তাহলে এবার প্রশ্ন হলো বিটকয়েন মাইনিং কি (What Is Bitcoin Mining)? আমরা জানি, "মাইনিং শব্দের অর্থ হলো খনন করা।" অর্থাৎ, বিটকয়েন তৈরি হয়ে থাকে মাইনিংয়ের মাধ্যমে(Bitcoin is made through mining.)। কিন্তু খনন বলতে আমরা বুঝি মাটি খোড়াখুড়ির মাধ্যমে কোন জিনিস তোলা এ জাতীয় কোন কিছু। কিন্তু বিটকয়েন মাইনিং এরকম খোড়াখুড়ির মাধ্যমে করা হয় না। এর মাইনিং প্রক্রিয়া সম্পুর্ন ভিন্ন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়।

আমরা জানলাম, নতুন বিটকয়েন তৈরি হয়ে থাকে বিটকয়েন মাইনিংয়ের মাধ্যমে। নতুন বিটকয়েন তৈরির একমাত্র প্রক্রিয়া হলো বিটকয়েন মাইনিং। মুলত মাইনিং হলো কম্পিউটারের মাধ্যমে বিটকয়েনের নতুন ট্রানজেকশন বা লেনদেন গুলো সমাধান করা এবং ব্লকচেইন লেজারে লিপিবদ্ধ করা। এর ব্যবস্থা এতই শক্তিশালী যে কেউ বা কোন প্রতিষ্ঠান চাইলেই কোন উপায় বিটকয়েন তৈরি করতে পারবেনা। আপনাকে যদি বিটকয়েন তৈরি করতে হয়। তাহলে তার একমাত্র উপায়ই হলো মাইনিং। বিটকয়েন মাইনিং হয় কম্পিউটারের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এবং এই প্রক্রিয়ায় বিটকয়েন লেনদেন গুলোর সমাধান করা হয়।

বিটকয়েন মাইনিং করার জন্য প্রয়োজন একটি বিটকয়েন মাইনার যন্ত্র (Bitcoin Mining Device) যেটিকে আমরা এক কথায় কম্পিউটার বলতে পারি। কম্পিউটারের কাজের গতি নির্ভর করে তার ফিচারের উপর। যেমন প্রসেসর, র‌্যাম ইত্যাদি আরো অনেক বিষয় নিয়ে। তবে এটি উল্লেখ্য যে বিটকয়েন মাইনিং করতে প্রয়োজন অধিক ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার। যা আমরা সাধারণ মানুষ বিভিন্ন কাজে ব্যাবহার করি সেসকল কম্পিউটার মাইনিং য়ের জন্য কিছুই না। তাই এর জন্য তৈরি করা হয় বিভিন্ন মাইনিং ডিভাইস। যা রিগ সেটআপ করার মাধ্যমে কাজ করে। এবং এটি প্রচুর পরিমাণ ক্ষমতা সম্পন্ন হয়ে থাকে। যা বেশ কয়েকটি সাধারণ কম্পিউটারের সমান।

মাইনিং মুলত প্রতিটি লেনদেন এর সমাধান করা। যার জন্য প্রয়োজন প্রচুর গানিতিক হিসাব নিকাশের। যা মাইনিং এর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। তাহলে কিভাবে বিটকয়েন উপার্জন করা হয়? যখন একটি মাইনার একটি লেনদেন সম্পন্ন করে তখন কিছু পরিমাণ বিটকয়েন তাকে দেওয়া হয় পারিশ্রমিক। যা থেকে একজন বিটকয়ের মাইনার আয় করে বিটকয়েন। এবং মার্কেটে আসে নতুন বিটকয়েন।

আর এটিই হলো বিটকয়েন তৈরির প্রক্রিয়া। কেউ চাইলো আর বাজারে বিপুল পরিমাণ বিটকয়েন ছেড়ে দিলো তা নয়। বিটকয়েন যত লেনদেন হবে ততই বিটকয়েন মাইনিং হবে আর নতুন বিটকয়েন তৈরি হবে।

বর্তমান বিশ্বে প্রচুর পরিমাণ মাইনিং ডিভাইস তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান আছে। সেই সাথে অনেকে ব্যাক্তিগত ভাবে মাইনিং করে থাকে। আবার অনেক বড় বড় কোম্পানি রয়েছে বিটকয়েন মাইনিং করার জন্য। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো চাইলে আপনিও একজন মাইনার হতে পারেন। 

আপনি যদি বিটকয়েন মাইনিং করতে চান তাহলে হয় আপনাকে বিটকয়েন মাইনার(Bitcoin Miner) কিনতে হবে। এবং মাইনার সেটআপ করার মাধ্যমে আপনি বিটকয়েন মাইনিং করতে পারবেন। তবে আপনাকে এটি মাথায় রাখতে হবে মাইনিং যন্ত্র সেটআপ করতে আপনার আরো দরকার হবে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ইন্টারনেট কানেকশন। এবং একটি মাইনিং ডিভাইস প্রচুর পরিমান বিদ্যুৎ খরচ করে থাকে। তাছাড়াও আইনি বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে বিটকয়েন মাইনিং করার ক্ষেত্রে! 

এছাড়াও আপনি চাইলে ইনভেস্ট করার মাধ্যমে ও বিটকয়েন মাইনিং করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে বিটকয়েন মাইনিং কোম্পনির থেকে প্যাকেজ কিনতে হবে এবং সেখানে তারাই আপনার সকল কাজ সম্পন্ন করে দিবে। নির্ধারিত সময়ে তারা আপনাকে পেমেন্ট করে দিবে!
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url