ডীপফেইক কি এটি কি আমাদের জন্য সুফল বয়ে আনবে নাকি বিপর্যয়

deepfake নামটি দুইটি শব্দের সমন্বয়ে তৈরি।Deep এবং Fake.Deep শব্দের অর্থ হলো গভীর এবং Fake শব্দের অর্থ হলো ভূয়া।তাহলে এর নামের মাধ্যমেই আমরা খুব সহজ ভাবে এর মূল বিষয় টুকু বুঝতে পারি।যে Deepfake video হলো কোন ব্যাক্তির নকল ভিডিও তৈরি করা।এর জন্য ব্যাবহৃত হয় এ আই।Deepfake এটি মূলত Artificial intelligence সম্পর্কিত একটি বিষয়।কিন্তু এর ফলে আমাদের ব্যাক্তি জীবনে যতটুকু সুফল বয়ে আনতে পারে তার চেয়ে অধিক দুশ্চিন্তার সৃষ্টি করেছে।
deepfake
বর্তমান যুগ ইন্টারনেটের যুগ।ইন্টারনেট যেমন সকল তথ্য আমাদের হাতের মুঠোয় হাজির করে দিচ্ছে। ঠিক তেমনই অনেক ক্ষেত্রে আমাদের সামনে ভুল তথ্য উপস্থাপন করছে।এর আগে আমরা অনেক ভূয়া(Fake) ভিডিও ইন্টারনেটে দেখেছি। এবং এসকল ফেইক ভিডিও(video) মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে(Social Media) গুলোতে প্রচুর পরিমানে ছড়ানো হয়ে থাকে।যার ফলে অগুনিত হারে তা ছড়িয়ে পড়ে খুব দ্রুত।

কিন্তু আগেকার এসকল ভিডিও ছিল ফটোসপ (Photoshop) বা অন্যান্য সফটওয়্যার (software) দ্বারা তৈরি।তাই খুব সহজেই আমরা ভিডিও গুলো সনাক্ত (Identify) করতে পারতাম। কারন ভিডিও গুলো কখনো নিখুঁত হতো না।কিন্তু ডিপফেইক ভিডিও গুলো এতটাই নিখুঁত ভাবে তৈরি হয় যার মাধ্যমে কেউ খালি চোখে শনাক্ত করতে পারবেনা।ভিডিওটি আসল নাকি নকল!

ডীপফেইক প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে?
ডিপফেইক(Deepfake Wikipedia) প্রযুক্তিতে দুইটি AI(Artificial Intelligence)  কাজ করে।একটি হলো ছবি এডিটর(Image editor) এবং একটি হলো ইমেজ ক্লাসিফায়ার(Classifier)।এই দুইটি এ.আই একই সাথে কাজ করে এই ডিপফেইক ভিডিও গুলো তৈরি করে। Image editor ছবি গুলো এডিট করে এবং ক্লিসিফায়ার(Classifier) এই ছবি গুলো পর্যালোচনা করে।যদি ছবিটি ফেইক বলে শনাক্ত করতে পারে তাহলে আবার ছবিটি এডিটরকে পাঠানো হয়।এবং আবার ছবির এডিট করা হয়।এভাবে যত সময় ছবিটির আসল-নকল (Original or Duplicate) শনাক্ত করা সম্ভব হয় তত সময় এই প্রক্রিয়ায় কাজ চলতে থাকে।এটি মূলত কষ্টসাধ্য এবং একই সাথে খরচ সাপেক্ষ একটি কাজ।তবে কম্পিউটার সাইন্সের উন্নতির সাথে সাথে এ কাজটিও অনেক সহজ এবং বাস্তব সম্মত হয়ে উঠেছে।
deepfake video
Deepfake video.source:Wikipedia
Deepfake প্রযুক্তির ভালো দিকগুলো:বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটনের তৃতীয় সূত্র: প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে।তাহলে এরই ধারাবাহিকতায় আমরা বলেতে পারি যেকোন জিনিসের ভাল এবং খারাপ উভয় দিকই রয়েছে।এই ডীপফেইক প্রযুক্তির উন্নয়ন সাধন হলে আমাদের তা কম্পিউটার ভিশনেরও উন্নতি সাধন করবে।এবং তার মাধ্যমে ক্যান্সারের সেল শনাক্ত করা,খাবারের গুনগত মান নির্নয় ইত্যাদি কাজে ও আসবে ব্যাপক অগ্রগতি।এবং ফ্লীম ইন্ডাস্ট্রিতেও এর দ্বারা ব্যাপক পরিবর্তন সাধন সম্ভব।এবং বর্তমানেও এর ব্যাপক ব্যাবহার লক্ষনীয়ভাবে দেখা যায়।

Deepfake এর অপব্যবহার:প্রতিটি ভালো জিনিসেরই কিছু অসাধু লোকজন অপব্যবহার করে থাকে।এর উদাহরণ আমরা অনেক জিনিসেই দেখতে পাই।ডীপফেইক প্রযুক্তি ও এর ব্যাতিক্রম না।এর মাধ্যমে খুব সহজেই মানুষের ভূয়া ভিডিও ফুটেজ তৈরি করে অনেকেই বিপদে ফেলার মতো কাজ করা সম্ভব।এবং এর ব্যাবহার খারাপ কাজে ভবিষ্যতে লক্ষনীয়ভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশংকা করেন প্রযুক্তিবিদগন।যার ফলে সাইবার ক্রাইম বৃদ্ধি পাবে বলে আশংকা তাদের।কারন আমি আগেই আপনাদের বলেছি ডীপফেইক প্রযুক্তি দ্বারা মানুষের নকল ছবি এবং ভিডিও তৈরি করা সম্ভব!সম্প্রতি সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুক এই ডীপফেইক ভিডিও সরানোর উদ্যোগ গ্রহন করেছে।এছাড়া বর্তমান সময় তৈরি হচ্ছে বিপুল পরিমাণ ডীপফেইক পর্নোগ্রাফি।যার দ্বারা ব্লাকমেইল করা হচ্ছে বিভিন্ন সেলিব্রিটিদেরকে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url