কম্পিউটার কোন পদ্ধতিতে এবং কীভাবে কাজ করে

কম্পিউটারের কাজ করার পদ্ধতি- কম্পিউটার দিয়ে কোনাে কাজ করানাের জন্য কম্পিউটারকে সেই কাজের তথ্য-উপাত্ত প্রদান করতে হবে। তথ্য-উপাত্ত দিয়ে কী করতে হবে সে বিষয়ে কম্পিউটারকে নির্দেশ দিতে হয়। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তকে ব্যবহারকারীর নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবহার করে কম্পিউটার ফল প্রদান করে।

কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে
তাহলে কম্পিউটারের কাজ করার পদ্ধতি কয়টি? কম্পিউটারের কাজ করার ধাপ বা পদ্ধতি হচ্ছে ৩ টি।

  1. ব্যবহারকারীর দেওয়াত থ্য-উপাত্ত ও নির্দেশ গ্রহণ করা (Input)।
  2. তথ্যের প্রক্রিয়াকরণ (Processing) করা।
  3. প্রক্রিয়াজাত তথ্য প্রদান বা প্রকাশ করা (Output)।

কম্পিউটারের এই তিন পর্বে বিভক্ত কাজের পদ্ধতি উদাহরণের মাধ্যমে বােঝার চেষ্টা করা যেতে পারে। যেমন-

ক) ধরা যাক, একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার টেবিলে বসে কাজ করছেন। পিয়ন এসে তার বাম পাশের একটি পেপার ট্রেতে কিছু নথি, চিঠিপত্র বা অন্য কোনাে কাগজ রেখে গেল। এটা হল ইনপুট (Input)।

খ. প্রধান শিক্ষক তার বাম পাশের ট্রে থেকে ইনপুট হিসেবে প্রাপ্ত নথি, চিঠিপত্র নিয়ে পড়লেন, চিন্তা করলেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বিচার-বিশ্লেষণ করলেন এবং তার সিদ্ধান্ত বা মতামত লিখলেন। অর্থাৎ তিনি প্রাপ্ত তথ্য (Input) প্রক্রিয়াকরণ (Processing)-এর কাজ করলেন। তিনি প্রক্রিয়াকরণপূর্বক সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা মতামত প্রদানের কাজটি করলেন মাথা খাটিয়ে।

গ) প্রধান শিক্ষক তাঁর সিদ্ধান্ত বা মতামত লিপিবদ্ধ করার পর নথি বা চিঠিপত্র ডান দিকের পেপার ট্রেতে রেখে দিলেন। এটি হল আউটপুট (Output)।

এবং অসমাপ্ত কাজের নথিগুলাে কক্ষের ফাইল কেবিনেটে তুলে রাখলেন।

ইনপুট এবং আউটপুটের মধ্যবর্তী পর্বে প্রধান শিক্ষকের মাথা খাটিয়ে কাজ করার অংশকে কম্পিউটারের কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট (Central Processing Unit = CPU)- এর সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটকে সংক্ষেপে সিপিইউ (CPU) বলা হয়। CPU- এর প্রধান দুটি অংশ হচ্ছে র‌্যাম (RAM = Random Access Memory) বা অস্থায়ী স্মৃতি এবং রম (ROM = Read Only Memory) বা স্থায়ী স্মৃতি।

অস্থায়ী স্মৃতি যখন যে বিষয় নিয়ে কাজ করে এবং যতটুকু সময় ধরে কাজ করে, তখন এবং ততটুকু সময়ের জন্যই ঐ বিষয়টি মনে রাখে। কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ অংশের স্মৃতি একেবারে শূন্য হয়ে যায়। এজন্য একে অস্থায়ী স্মৃতি বলা হয়।

[ প্রযুক্তি কি এবং মানব জীবনে প্রযুক্তির গুরুত্ব]

পক্ষান্তরে, স্থায়ী স্মৃতি পরিচিত কিছু দেখলেই তা শনাক্ত করতে পারে, পড়তে পারে এবং চেনা বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারে। স্থায়ী স্মৃতিতে বিদ্যমান কোনাে বিষয় মুছে ফেলা যায় না। এ জন্যই একে স্থায়ী স্মৃতি বলা হয়।

কম্পিউটারের তথ্য-উপাত্ত ও নির্দেশ সরবরাহ করা হয় ইনপুট যন্ত্রের মাধ্যমে এবং ফল পাওয়া যায় আউটপুট যন্ত্রের মাধ্যমে। কম্পিউটারের ইনপুট হিসেবে ব্যবহার করা তথ্য-উপাত্ত এবং ফল হিসেবে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত জমা করে রাখা হয় ডিস্কে বা অন্যান্য মজুদ যন্ত্র বা স্টোরেজ ডিভাইসে (Storage Device)।

[ কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা]

উপরের উদাহরণে ইনপুট হিসেবে আসা বা আউটপুট হিসেবে পাওয়া নথি বা চিঠিপত্র মজুদ (Storage) করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ফাইল কেবিনেট। ফাইল কেবিনেটে আবার কয়েকটি ড্রয়ার থাকে। একেক ড্রয়ারে একেক ধরনের নথি রাখা হয়। এতে পুনরায় কাজের সময় ঐ সব নথি খুঁজে পেতে সুবিধা হয়। কম্পিউটার ডিকেও এভাবে তথ্য সাজিয়ে রাখতে হয়। কম্পিউটারে প্রতিটি নথিকে এক একটি ফাইল (File) হিসেবে অভিহিত করা হয় এবং ড্রয়ারের ভূমিকা পালন করে ফোল্ডার (Folder)। একই ধরনের ফাইলগুলাে একটি ফোল্ডারে রেখে দিলে প্রয়ােজনে খুঁজে পেতে সুবিধা হয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url