হার্ট অ্যাটাকের কারন লক্ষন এবং প্রাথমিক চিকিৎসা

হার্টের সমস্যা বোঝার অনেক উপায় রয়েছে। কারো হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ দেখা দিলে তার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যাবস্থা করতে হবে।কারন প্রাথমিক চিকিৎসা হতে পারে হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার অন্যতম উপায়।হার্ট এটাক এর পূর্ব লক্ষণ দেখা দিলে কখনই অবহেলা করা উচিত নয়। হার্ট এটাক কাকে বলে এবং এর লক্ষন ও হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায় জেনে নেই। হার্ট হচ্ছে আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ।কিছু সময়ের জন্য হার্ট তার কাজ বন্ধ করে দিলে আমাদের মৃত্যু অনিবার্য।তাহলে আমরা বুঝতে পারছি যে আমাদের জীবন ধারন করতে হার্টের গুরুত্ব কতখানি। তবে আমরা হেলায় হেলায় হার্ট কে ঠেলে দিছি ঝুকির দিকে।হার্ট অ্যাটাক হলেন একটি ঝুকিপূর্ন বিষয় তাই আমাদের সচেতন হতে হবে হার্ট এ্যাটাক সম্পর্কে। জানতে হবে হার্ট এটাকের কারন।হার্ট অ্যাটাক কাকে বলে, হার্ট এ্যাটকের লক্ষন গুলো এবং এসব লক্ষন দেখা দিলে কি ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে এসকল বিষয় গুলো আমাদের জানা অত্যন্ত জরুরি।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষন
আমরা যা জানবঃ
হার্ট অ্যাটাক কাকে বলে
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষন
হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হলে করনীয়।

হার্ট অ্যাটাক কাকে বলেঃ
আমাদের শরীর বেঁচে থাকার জন্য তার প্রয়োজন সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গে সবসময় রক্ত সঞ্চালন হওয়া।যে কাজটি করে থাকে আমাদের হৃদপিণ্ড। হৃদপিণ্ডের ইংরেজি হলো হার্ট। যার ওজন মাত্র ৩১০ গ্রাম।যা আমার ৬০-৭০ কেজি ওজনের দেহটাকে সচল রাখতে মূখ্য ভূমিকা পালন করে। একটি ব্যাক্তি মৃত্যু নির্ণয় করা হয় তার হার্টের কাজ বন্ধ হলে তার মাধ্যমে। অর্থাৎ হার্ট যদি একবার তার কাজ সম্পূর্ন রুপে বন্ধ করে দেয় তাহলে আমরা তাকে মৃত বলে ঘোষনা করতে পারি।তাহলে বুঝতেই পারছেন এটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য।
হার্ট আমাদের শরিলে রক্ত সরবারহের কাজ করে।আর তার এই কাজের জন্য প্রয়োজন শক্তি।কারন আমাদের সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন করতে প্রচুর পরিমান শক্তি তাকে ব্যায় করতে হয়।হার্ট এই শক্তি পায় অক্সিজেন যুক্ত রক্ত সরবারাহের মাধ্যমে। আর এই অক্সিজেন যুক্ত রক্ত সরবারাহের কাজ করে হার্টের করোনারি ধমনি।যদি কোন কারন এই রক্ত সরবারাহ বন্ধ হয়।এবং রক্ত জমাট বাধার কারনে করোনারি ধমনিতে ব্লক সৃষ্টি হয় তাহলে পার্শ্ববর্তী অন্যান্য পেশিতে ঠিক মত রক্ত চলাচল করে না এবং এটিকে আমরা বলি মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কসন বা হার্ট এ্যাটাক।

হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগ কখনো হটাৎ করে হতে পারে না।এর লক্ষন অনেক আগে থেকেই দেখা দেয়।কিন্তু আমাদের অসচেতনতা এবং বেখেয়ালিপনার কারনেই আমরা জটিল সমস্যার মধ্যে পড়ে যাই।

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষনঃ
কারো হার্ট অ্যাটাক(Heart attack) হলে তার পূর্বেই বিভিন্ন লক্ষন দেখা দেয়।সেটা হতে পারে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আগ মূহুর্তে অথবা মাস খানেক আগে থেকে।তাই আমাদের এসকল লক্ষন গুলো জানতে হবে।হার্ট অ্যাটাকে মাস খানেক আগে থেকে শ্বাস প্রশ্বাস ছোট হতে পারে।অর্থাৎ খুব স্বল্প শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহন এবং ত্যাগ করা।এবং খুব দ্রুত নিশ্বাস ফেলা।কার্ডিওলজিস্টরা বলেন শ্বাস প্রশ্বাস ছোট হতে পারে এক মাস আগে থেকেই। এছাড়া শরীর দূর্বল হয়ে পড়া অল্পতেই হাঁপিয়ে ওঠা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।এরকম সমস্যা হলে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। এসকল লক্ষন দেখা দেওয়ার পড়েও অনেকেই এসকল লক্ষন গুলো এড়িয়ে যায়। এবং তাড়াই হার্ট অ্যাটাক এর মত সমস্যার সম্মুখীন হয়।

হটাৎ করে অতিরিক্ত ঘাম হওয়াও হার্ট অ্যাটাক এর পূর্ব লক্ষন।যখন মানুষের হার্ট ব্লক হয়ে যায় তখন রক্ত সঞ্চালন হতে সমস্যা হয়।এর জন্য দেহের রক্ত সঞ্চালন করতে বাধা পাওয়া এবং এর জন্য হার্টের এর জন্য অতিরিক্ত কষ্ট করতে হয়।এর ফলে আমাদের শরিল ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এবং শরীরের থেকে ঘাম বের হয়। এসকল কারনে ঘাম হলে তা একটু ঠান্ডা ধরনের হয়ে থাকে। এসকল লক্ষন গুলো দেখা দিলে বিলম্ব না করেই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। এবং ডাক্তারের পরামর্শ মত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

বুকে ব্যাথা অনুভব করা চাপ দিয়ে থাকে এবং প্রচুর পরিমাণ অস্বস্তি হয়ঃ
হার্ট এট্যাক হওয়ার আগে প্রচুর পরিমাণ বুকে ব্যাথা হওয়া একটি কমন সমস্যা যাদের হার্ট এট্যাকের ঝুঁকি থাকে তাদের বুকে ব্যাথা হতে পারে। মনে হয় বুকে কিছুতে চেপে ধরেছে এবং প্রচুর পরিমাণ অস্বস্তি বোধহয়।

শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলিতেও ব্যাথা অনুভব করাঃ
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষন গুলো মধ্যে শুধু যে বুকে ব্যাথা হবে এমন কথা নয়।হার্ট অ্যাটাকের লক্ষনে পিঠে ব্যাথা, গলা ব্যাথা,বাম হাত পা ব্যাথা,চোয়াল ব্যাথা হওয়ার পাশাপাশি অসাড়তার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
হার্টের বিভিন্ন অংশ

হার্ট অ্যাটাক হলে কি করতে হবেঃ
কারো হার্ট এ্যাটাক হয়েছে বুঝলে তাকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তবে কাছেই ডাক্তার পাওয়া না গেলে তাকে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে।এসকল বিষয় গুলো আমাদের সকলের জানা উচিত।এর ফলে আমরা হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ঝুকি কমিয়ে আনতে পারবো।

কেউ হার্ট অ্যাটাক করেছে বুঝতে এবং তার বুকে ব্যাথা অনুভব করলে তাকে দ্রুত ব্যাথা নাশক ঔষধ খাওয়াতে হবে।এক্ষেত্রে অ্যাসপিরিন জাতীয় ব্যাথার ঔষধ খাওয়াতে হবে।তবে এধরনের ঔষধে যদি এলার্জি সমস্যা থাকে তাহলে দেওয়া যাবেনা।সেক্ষেত্রে অন্য কোন ব্যাথার ঔষধ দিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ মত।এবং ঔষধ চিবিয়ে খেলে কাজ করে দ্রুত।তাই পাড়লে চিবিয়ে খাবে বা গুড়ো করে খাওয়ানো উচিত।

রোগীর শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছে কিনা দেখতে হবে।অনেক সময় জ্বিব্বার কারনে গলা আটকে যেতে পারে।সেটি খেয়াল করতে হবে এবং এই সমস্যা হলে মুখে আঙ্গুল দিয়ে ঠিক করে দিতে হবে।
জানতে হবে রোগীর বমি আসে কিনা।এবং বমি করলে বমি যেন ফুসফুসে প্রবেশ না করতে পারে খেয়াল করুন। 

রোগীর শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছে কি না দেখতে হবে।এবং রোগীর পোষাক ঢিলে করে দিতে হবে।এবং শরীরের যাতে পর্যাপ্ত বাতাস প্রবেশ করতে পারে তার ব্যাবস্থা করতে হবে।

কোন ভাবে রোগীকে উত্তেজিত করা যাবে না।এবং মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে।মনে রাখবে এমন সময় রোগী যত আতঙ্কিত হয়ে পড়বে ততই সমস্যা বৃদ্ধি পাবে। 

এর মাঝে একজন ডাক্তারের কাছেন নিতে হবে এবং দ্রুত চিকিৎসা প্রদান করতে হবে।

আরো দেখুন -
ডায়াবেটিস এর বিস্তারিত আলোচনা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে যে ৭ টি খাবার খাবেন
শীতে ঠোঁটের যত্ন
মেদ বা চর্বি কমানোর সহজ উপায়
শীতকালে ত্বকের যত্নে কি করব
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ৯ উপায়
পোল্ট্রি মুরগির কলিজার ক্ষতিকর প্রভাব
হাই ব্লাড প্রেশার কি ও হওয়ার কারন
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url